Thursday, November 17, 2022

শিশু এবং গর্ভবতী নারীদের আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের ঘাটতি পূরণে করণীয়

 খাদ্য তালিকায় পর্যাপ্ত আয়রন না থাকলে রক্তস্বল্পতার ঝুঁকি বাড়ে। শিশু ও গর্ভবতী নারীদের খাদ্য তালিকায় পর্যাপ্ত আয়রনযুক্ত খাদ্য থাকা আবশ্যক। শরীরে আয়রন ঘাটতির লক্ষণগুলো হল:





ক্লান্তি;

দুর্বলতা;

ফ্যাকাশে চামড়া;

মাথা ঘোরা;

মনোযোগের অভাব;

ক্ষুধামন্দা;

মাথাব্যথা;

বুক ব্যথা;

হৃৎস্পন্দন বৃদ্ধি;

নখ এবং চুল খুব ভঙ্গুর;

শুষ্ক বা ফাটা ঠোঁট;

হাত ও পা ঠাণ্ডা হওয়া;


বাচ্চাদের মধ্যে আয়রনের অভাব- খাবারের সুপারিশ


বাচ্চাদের মধ্যে আয়রনের ঘাটতি বেশি দেখা যায়। শিশুদের প্রতিদিনের আয়রনের প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য খাদ্যতালিকা বৈচিত্র্যময় হওয়া উচিত। খাদ্যতালিকায় পালংশাক, ডিম, লাল মাংস এবং মাছের মতো খাবার থাকা জরুরী।


শিশুদের যে খাবারগুলো দেবেন:


ডিম- শিশুর জন্য আয়রন এবং প্রোটিনের একটি অসাধারণ উৎস;

দুগ্ধজাত পণ্য- শিশুর খাদ্যতালিকায় প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়াম, আয়রন, ভিটামিন ডি সরবরাহ করে;

সিরিয়াল - আয়রন এবং ফাইবার সমৃদ্ধ;

সবুজ শাকসবজি (পালং শাক, ব্রকলি, সালাদ, মটরশুঁটি, মটর, মসুর ডাল)- গ্রিলড বা স্টিমযুক্ত খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়;

টমেটো- এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, যা আয়রন শোষণের জন্য প্রয়োজন;

লাল মাংস (গরুর মাংস, ভেড়া) - সাদা মাংসের চেয়ে লাল মাংসে লোহার পরিমাণ বেশি থাকে; গরুর মাংস, হাড় এবং লিভারে সর্বোচ্চ আয়রন থাকে;

সাদা মাংস- টার্কি, মুরগী;

মাছ- ঝিনুক, টুনা;

বাদাম- ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং আয়রনের উৎস;

ফল - এপ্রিকট, পিচ, বরই, শুকনো ডুমুর, খেজুর, আনারস;


গর্ভবতী নারীদের জন্য আয়রন সমৃদ্ধ খাবার- আপনার কী জানা উচিত?


গর্ভাবস্থায়, আয়রনের বেশিরভাগ অংশ মায়ের দেহ থেকে ভ্রূণে স্থানান্তরিত হয়। শেষ তিন মাস এই প্রক্রিয়াটি দ্রুত চলে। স্বাভাবিক অবস্থায় একজন নারীর দিনে ১৮ মিলিগ্রাম আয়রন প্রয়োজন হয়। তবে গর্ভাবস্থায় তার দিনে ২৭ মিলিগ্রাম আয়রন প্রয়োজন।


গর্ভবতী নারীদের আয়রনের ঘাটতি পূরণে বিভিন্ন শাকসবজি, ফলমূল, উচ্চমানের প্রোটিন, ভিটামিন পরিপূরক এবং খনিজ লবণ সমৃদ্ধ খাবারের পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে পরিপূরক বা সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। 


গর্ভবতী নারীদের আয়রন সমৃদ্ধ এই খাবারগুলো খাওয়া উচিত:


শাক, ব্রকলি, লাল বীট

লাল মাংস- গরু এবং ভেড়ার মাংস

মুরগীর মাংস

আস্ত শস্যদানা

ডিম

সামুদ্রিক মাছ

শুকনো ফল (কিসমিস, বরই)


মনে রাখবেন: গর্ভাবস্থা এবং স্তন্যদানের সময় শরীরের আরও বেশি আয়রনের প্রয়োজন হয়। শিশু ও গর্ভবতীদের ডায়েটে পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন থাকা জরুরি। 


Wednesday, November 16, 2022

গ্যাস্ট্রাইটিস: কী খাওয়া উচিত এবং কী এড়ানো উচিত

 গ্যাস্ট্রাইটিস বাংলাদেশে গ্যাস্ট্রিক নামে বেশি পরিচিত। এটি পেটের একধরণের হজম ব্যাধি। গ্যাস্ট্রাইটিসজনিত লক্ষণগুলো থেকে মুক্তি এবং কার্যকরভাবে লড়াইয়ের জন্য খাদ্যতালিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 




গ্যাস্ট্রাইটিসের লক্ষণ কী কী?


  • পেটে তীব্র ব্যথা বা জ্বলন


  • বমি বমি ভাব এবং বমি (কখনও কখনও রক্ত বের হতে পারে)


  • অল্প খেয়ে পেট ভরে যাওয়ার অনুভূতি


  • ক্ষুধামন্দা


  • ঘন ঘন হেঁচকি


  • বদহজম


গ্যাস্ট্রাইটিসের জন্য ডায়েট- কী খাওয়া এবং এড়ানো উচিত?


রোগের বিস্তার এবং জটিলতা প্রতিরোধের জন্য ডায়েট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বেশ কিছু খাবার রয়েছে যা গ্যাস্ট্রাইটিসের লক্ষণগুলো থেকে মুক্তি দিতে পারে। আবার কিছু খাবার লক্ষণ ও প্রদাহকে আরও খারাপ অবস্থায় নিয়ে যেতে পারে।


কোন খাবারগুলো খাবেন:


  • শাকসবজি

  • শিম জাতীয় শস্য

  • সবুজ মটরশুঁটি

  • সয়াবিন

  • ডিম (সিদ্ধ, ভাজা নয়)

  • মধু

  • সীফুড (আনরোস্টেড)

  • শসা, গাজর, সাদা আলু, ব্রকলি, সালাদ, বাঁধাকপি, শাক

  • কম অ্যাসিডিটিযুক্ত ফল

  • পনির

  • দই

  • সূর্যমুখী, জলপাই তেল (কাঁচা)

  • হলুদ, আদা

  • ত্বকবিহীন মুরগী / টার্কি

  • মাছ


কোন খাবারগুলো এড়াতে হবে:


  • গরম সস, মেয়োনিজ

  • ভুট্টা এবং ভুট্টা পণ্য

  • টক ফল (সাইট্রাস)

  • টক শাকসবজি (পেঁয়াজ)

  • রসুন (স্বল্প পরিমাণে অনুমোদিত)

  • অ্যালকোহল

  • চকোলেট

  • কফি

  • চা

  • এনার্জি ড্রিংক্স

  • ভাজা খাবার

  • মিষ্টি, আইসক্রিম এবং প্যাস্ট্রি

  • চর্বিযুক্ত খাবার

  • ঝাল খাবার

  • প্রক্রিয়াজাত মাংস (সসেজ)

  • লাল মাংস

  • হাঁস / হাঁসের মাংস

  • ধূমায়িত মাংস

  • টমেটো এবং টমেটো পণ্য (সস, ঝোল)

  • সফট ড্রিংক্স

  • শোধিত সিরিয়াল

  • চিপস

  • গোল মরিচ


গ্যাস্ট্রাইটিস হলে কী রান্না করবেন? সহজ রেসিপি


শাকসবজি দিয়ে ভাত


প্রয়োজনীয় উপকরণ: 


  • আধা কাপ রান্না করা বাদামি চাল


  • ২০ গ্রাম চিনাবাদাম


  • ৪ টেবিল চামচ গাজর ছোট ছোট টুকরো করা


  • সবুজ মটরশুঁটি এক চামচ আগে হাইড্রেটেড


  • ৪ টেবিল চামচ ফুলকপি ছোট টুকরো টুকরো করে কাটা


  • এক চিমটি লবণ 


প্রস্তুতি: আধা কাপ পানিতে চাল মিশিয়ে নরম হওয়া পর্যন্ত ফোটান। গাজর, ফুলকপি, চিনাবাদাম এবং মটরশুঁটি সেদ্ধ করে ভাতের সাথে মেশান।


সবজির সাথে বার্লি স্যুপ


প্রয়োজনীয় উপকরণ: 


  • আধা কাপ রান্না করা পার্ল বার্লি


  • ৮৫ গ্রাম মুরগির বুকের মাংস


  • ৪ টেবিল চামচ কাটা গাজর


  • কাটা ব্রকলি আধা কাপ


  • এক চিমটি লবণ 


প্রস্তুতি: মুরগির মাংস সিদ্ধ করুন, তারপর বাকি উপাদানগুলি যুক্ত করুন। একটি ঢাকনা দিয়ে ঢেকে ৫ মিনিটের জন্য সিদ্ধ করুন।


গ্যাস্ট্রাইটি নিয়ে জীবন যাপন খুবই কষ্টের, পাশাপাশি অস্বস্তিরও। সঠিক খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে জীবনের মান অনেকটাই উন্নতি করা সম্ভব। 


Tuesday, November 15, 2022

শিশুদের রক্তস্বল্পতা: লক্ষণ এবং চিকিৎসা

 শিশুদের সংবেদনশীল শরীরে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় উপাদানের ঘাটটি দেখা দেয়। গবেষণা অনুসারে, বিশ্বব্যাপী শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ ঘাটতি- আয়রনের ঘাটতি। এটি সাধারণত দুর্বল খাদ্যাভ্যাসের কারণে হয়। তবে নির্ধারিত সময়ের আগে জন্ম নেয়া শিশু বা বয়ঃসন্ধিকালেও এই ঘাটতি দেখা দিতে পারে। 




আয়রনের ঘাটতি বা রক্তস্বল্পতার নির্দিষ্ট লক্ষণ থাকে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সাধারণ চিকিৎসায় তা ভালো হয়। 


রক্তস্বল্পতার লক্ষণগুলো কী কী?


আয়রনের অভাবে লোহিত রক্ত কণিকায় হিমোগ্লোবিনের অভাব দেখা দেয়। এটি ফুসফুস থেকে শরীরের সমস্ত টিস্যুতে অক্সিজেন পরিবহনে বাঁধা সৃষ্টি করে। এই ঘাটতি ফেরিক অ্যানিমিয়া হিসেবে পরিচিত এবং এটি শিশুদের মধ্যে খুব সাধারণ। 


রক্তস্বল্পতার নির্দিষ্ট লক্ষণগুলো সহজেই সনাক্ত করা যায়:


  • ক্ষুধামন্দা;

  • শ্বাসযন্ত্রের অসুবিধা;

  • মাথাব্যথা;

  • ফ্যাকাশে ত্বক এবং ঠোঁট;

  • বারবার সংক্রমণ;

  • রক্ত ক্ষয় (আঘাত বা মলের মাধ্যমে);

  • অত্যধিক ঘামা;

  • হৃৎস্পন্দন বৃদ্ধি;

  • অসময়ে ক্ষুধা;

  • জিহ্বার ফোলাভাব;

  • নখ দুর্বল হয়ে যাওয়া;

  • ক্ষত নিরাময়ে ধীরগতি;


যে কারণে শিশুদের মধ্যে আয়রনের ঘাটতি হয় 


বয়স: তিন বছরের কম বয়সী শিশুরা, যারা অতিরিক্ত গরুর দুধ পান করে, তাদের আয়রনের ঘাটতির লক্ষণ দেখা দিতে পারে। 


বয়ঃসন্ধিকাল: বয়ঃসন্ধিকালে কিশোরীরাও মাসিকের কারণে রক্তস্বল্পতায় ভুগতে পারে।

 

অন্য অসুখের কারণে: যেসব শিশুর রক্তজনিত রোগ রয়েছে, সেসব শিশুর আয়রনের ঘাটতির ঝুঁকি বেশি। 


আয়রনের ঘাটতি নির্ণয়


শিশুদের আয়রনের ঘাটতিজনিত রোগ নির্ণয় শারীরিক পরীক্ষা দিয়ে শুরু হয়। এরপর, রক্ত পরীক্ষা করা হয়। 


আয়রনের ঘাটতি নির্ধারণের জন্য ব্যবহৃত পরীক্ষাগার পরীক্ষাগুলো হল:


হোমোলিউকোগ্রাম- রক্তস্বল্পতা নির্ণয়ের একটি জটিল ও কার্যকর পদ্ধতি এটি।  


বোন ম্যারো অ্যাসপিরেশন- এটি অ্যাপ্লাস্টিক রক্তস্বল্পতা সনাক্তকরণের জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা পদ্ধতি। 


হিমোগ্লোবিন ইলেক্ট্রোফোরেসিস- লিউকেমিয়া নির্ণয়ের জন্য বহুল ব্যবহৃত আরেকটি পদ্ধতি এটি;


হিমোগ্লোবিন ইলেক্ট্রোফোরেসিস এই পদ্ধতিতে অস্বাভাবিক লাল রক্তকণিকা চিহ্নিত করা হয়;


রক্তস্বল্পতার চিকিৎসা এবং প্রতিকার


রক্তস্বল্পতা চিকিৎসা প্রথম পর্যায়ে, দেহে আয়রন সাপ্লিমেন্ট দেয়া হয়। এটি প্রাকৃতিকভাবে প্রচুর পরিমাণে আয়রনযুক্ত খাবার গ্রহণ করে,বা  সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করেও হতে পারে। তবে সাপ্লিমেন্ট ব্যবহারের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। 


রক্তস্বল্পতা চিকিৎসায় সেসব খাবার খাবেন: 


টাটকা ফল- আঙ্গুর, ডুমুর, বরই, স্ট্রবেরি, বাঙ্গি;

টক ফল- আঙ্গুর, বরই, এপ্রিকট, পীচ;

সীফুড- চিংড়ি, ঝিনুক;

শাকসবজি- পালং শাক, বাঁধাকপি, মসুর, মিষ্টি আলু, মটরশুঁটি;

বীজ- সয়াবিন বীজ, কুমড়োর বীজ;

সিরিয়াল- ব্রান, ওটস, কর্ন, রাই;

মাছ-মাংস- মুরগী এবং গো-মাংস (গিলা, কলিজা, ফুসফুস), মাছ। 


Monday, November 14, 2022

শুষ্ক ঠোঁট: কারণ ও প্রতিকার

 বাহ্যিক পরিবেশের ক্ষতিকারক উপাদানগুলো থেকে ত্বক আমাদের শরীরকে সুরক্ষা দেয়। ঠোঁট শরীরের একটি বিশেষ সংবেদনশীল অংশ যেখানে ত্বকের টিস্যুগুলো সহজে আক্রান্ত হতে পারে। ফলে ঠোঁট শুষ্ক হয় কিংবা ফেটে যায়। 




শুষ্ক ঠোঁটের কারণ


শুষ্ক বা ফাটা ঠোঁট নিঃসন্দেহে অস্বস্তি সৃষ্টি করে। তবে শীতকালে এই অবস্থা প্রকট হয়। ঠোঁটের এই সমস্যাগুলোর বেশ কিছু কারণ রয়েছে। এখানে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি কারণ আলোচনা করা হলো:


চরম তাপমাত্রা


অত্যধিক তাপমাত্রা বা খুব কম তাপমাত্রা- এই দুই দুটিই ঠোঁটের স্বাস্থ্য এবং চেহারার ওপর প্রভাব ফেলে। শুষ্ক ঠোঁটের লক্ষণগুলো বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় শীত এবং গ্রীষ্মে আরও স্পষ্ট হয়। এর কারণ হল ঠাণ্ডা বা সূর্যের প্রখর  রশ্মি ঠোঁটের ওপর প্রভাব ফেলে। 


পানিশূন্যতা


যখন আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান না করি তখন ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। একইভাবে ঠোঁটে ডিহাইড্রেশনের কারণে ঠোঁট শুষ্ক বা ফেটে যায়। 


অযত্ন


ঠোঁটের বিশেষ যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। বিশেষত যেসব ঋতুতে তাপমাত্রা খুব বেশি বা খুব কম হয়। নির্দিষ্ট কিছু লিপস্টিক ব্যবহার যা ঠোঁটকে অতিরিক্ত শুকিয়ে দেয়, ভুলভাবে মেক-আপ ওঠানো বা লিপ বামের অনিয়মিত ব্যবহারের কারণে ঠোঁট শুষ্ক বা ফেটে যেতে পারে। 


বদভ্যাস


ঠোঁট কামড়ানোর মতো কিছু বদভ্যাসের কারণে ঠোঁটের ক্ষতি হতে পারে। জিহ্বা দিয়ে বারবার ঠোঁট স্পর্শও ঠোঁটের পানিশূন্যতার কারণ করে। সাইট্রাস ফল, কফি, বা অতিরিক্ত নোনতা খাবারেও ঠোঁটের ক্ষতি হতে পারে। 


সংক্রমণ


ছত্রাক বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ জনিত কারণেও ঠোঁটের ক্ষতি হতে পারে। এছাড়া কিছু চর্ম রোগের কারণে ঠোঁট শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। 


শুষ্ক ঠোঁটের প্রতিকার


শুষ্ক ঠোঁটের চিকিৎসার কয়েকটি কার্যকর প্রতিকার এখানে দেওয়া হল:


লিপ বাম


শুষ্ক ঠোঁটের জন্য সর্বাধিক ব্যবহৃত পণ্য হল লিপ বাম। তবে মেন্থল, ইউক্যালিপটাস, মেন্থল বা সিলিকন তেল রয়েছে এমন এমন লিপ বামগুলো এড়িয়ে চলুন। বিশেষজ্ঞরা কাঠি আকারের লিপ বালা ব্যবহারের পরামর্শ দেন। 


নারকেল তেল


শুষ্ক ঠোঁটের প্রাকৃতিক চিকিৎসা নারকেল তেল। নারকেল তেলের তীব্র ময়শ্চারাইজিং বৈশিষ্ট্যের কারণে ঠোঁটের টিস্যুগুলোকে সহজেই উদ্দীপিত করে।


হাইড্রেশন


প্রতিদিন কমপক্ষে ২ লিটার পানি পান আপনার ঠোঁট সহ পুরো শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে সহায়তা করবে। আপনি অন্যান্য তরল যেমন চা বা প্রাকৃতিক ফলের রসও পান করতে পারেন। তবে, অতিরিক্ত কফি বা টকযুক্ত রস এড়িয়ে চলুন। অ্যালকোহলও এড়ানো উচিত। কারণ এটি ডিহাইড্রেশন সৃষ্টি করে।


Sunday, November 13, 2022

শিশুদের বিষণ্ণতা: উপসর্গ, কারণ ও চিকিৎসা

 আমরা কমবেশি সবাই বিষণ্ণতায় ভুগি।যে কোন দেশের শহরাঞ্চলের মানুষ বেশি বিষণ্ণতায় ভোগে। প্রাপ্ত বয়স্কদের বিষণ্ণতা সহজে বোঝা গেলেও শিশুদের ক্ষেত্রে তা কঠিন। 




বিষণ্ণতার কারণ কী?


বহু কাল ধরেই  বিষণ্ণতার কারণ খুঁজে বের করতে গবেষণা করে চলেছেন বিজ্ঞানী এবং চিকিৎসকরা। সহজে বলতে গেলে বিষণ্ণতা হলো মুড ডিসঅর্ডার বা মেজাজের ব্যাধি বলা যায়। মানুষের দুঃখ, ক্রোধ এবং নিরাপত্তাহীনতা অনুভূতির সাথে যুক্ত থাকে এই অসুখ। এছাড়াও কয়েকটি কারণে বিষণ্ণতা বাসা বাধতে পারে শরীরে। 


জিনগত কারণ


পরিবারের সদস্যদের কারও বিষণ্ণতা থাকলে শিশুরও তা হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব শিশুর নিকট আত্মীয়ের বিষণ্ণতার সমস্যা রয়েছে, তাঁদের বিষণ্ণতায় ভোগার সম্ভাবনা ৭০ ভাগ। 


ট্রমা


ব্যক্তি জীবনে ঘটা দুর্ঘটনা, প্রিয়জন হারানো, শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েও অনেকে বিষণ্ণতায় ভোগেন।


মস্তিষ্কের গঠন 


মস্তিষ্কের সামনের লব কম সক্রিয় থাকলে ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতার ঝুঁকি বেশি থাকে। 


শারীরিক অসুস্থতা


অনিদ্রা, বাতের ব্যথা, এডিএইচডি সিনড্রোম প্রভৃতি অসুখ বিষণ্ণতাকে প্রভাবিত করতে পারে।


মাদক গ্রহণ


নিয়মিত মাদকদ্রব্য নেয়া ব্যক্তিদের প্রায় ৩০% লোক বিষণ্ণতায় ভোগেন।


সামাজিক অবস্থান


অর্থনৈতিক, মানসিক ও সামাজিক সমস্যার কারণেও বিষণ্ণতার বিকাশ ঘটতে পারে।



বিষণ্ণতার লক্ষণ


মানসিক ও শারীরিক, দুই ধরণের লক্ষণ দ্বারা বিষণ্ণতা প্রকাশ পায়। বিষণ্ণতার শারীরিক লক্ষণগুলো হলো:


মাথাব্যথা;

পিঠে ব্যথা;

পেশীতে টান;

ক্ষুধামন্দা;

ওজন হ্রাস বৃদ্ধি;

বদ হজম;

মারাত্মক ক্লান্তি;

অনিদ্রা;

অসাড়তা;


বিষণ্ণতা বাড়ার সাথে সাথে উদাসীনতা,একাকীত্ব, দ্রুত মেজাজ হারানো, অমনোযোগীসহ নানা লক্ষণ দেখা যায়। 


বিষণ্ণতার চিকিৎসা


বিষণ্ণতা একটি গুরুতর অসুস্থতা। সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা না হলে ব্যক্তির অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে। তবে, যথাযথ চিকিৎসার মাধ্যমে কয়েক সপ্তাহের থেরাপি দিলে অবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হয়। তবে অবশ্যই তা বিশেষজ্ঞ  চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী। 


সাইকোথেরাপি


বিষণ্ণতা চিকিৎসায় সবচেয়ে পরিচিত পদ্ধতি সাইকোথেরাপি। এন্টিডিপ্রেসেন্ট ওষুধের পাশাপাশি এই চিকিৎসা সহায়ক হতে পারে। সিবিটি পদ্ধতিতে বিষণ্ণতা নিরাময় কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। সিবিটি হ'ল বর্তমান সময়কে কেন্দ্র করে এবং সমস্যা সমাধানে, রোগীকে তার চিন্তাভাবনার উন্নতি করতে সহায়তা করে। 


ওষুধের চিকিৎসা 


বিষণ্ণতা মারাত্মক পর্যায়ে চলে গেলে সর্বাধিক ব্যবহৃত ওষুধ এন্টিডিপ্রেসেন্টস। মস্তিষ্কের রসায়ন পরিবর্তন করে প্রথম সপ্তাহ থেকেই রোগীর উন্নতি করতে সহায়তা করে। চিকিৎসার প্রথম দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে এন্টিডিপ্রেসেন্টগুলোর কার্যকারিতা দেখা যায়। সাধারণত রোগীদের কমপক্ষে ছয় মাস ধরে চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।


ইলেক্ট্রোকনভালসিভ থেরাপি. এই পদ্ধতিও বিষণ্ণতা জটিল পর্যায়ে চলে গেলে ব্যবহার করা হয়। একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞসহ পেশাদার চিকিৎসকদের মাধ্যমে এই পদ্ধতিতে চিকিৎসা হয়। 


একটি শিশুর বিষণ্ণতা বড় হওয়ার সাথে সাথে মারাত্মক রূপ ধারণ করতে পারে। তাই প্রচলিত চিকিৎসার পাশাপাশি পরিবার থেকে শিশুকে আদর যত্নে মানুষ করলে বিষণ্ণতা থেকে অনেকটাই মুক্তি সম্ভব। 


(বিঃদ্রঃ যেকোন চিকিৎসার আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। )


স্বাস্থ্য সেবা, নারী স্বাস্থ্য, শিশু সেবা সম্পর্কিত আর্টিকেল লিস্ট


১। শিশুদের বিষণ্ণতা: উপসর্গ, কারণ ও চিকিৎসা


২। নারীদের অতিরিক্ত ঘামঃ কারণ ও চিকিৎসা


৩। রুক্ষ চুলের প্রাকৃতিক চিকিৎসা: কিছু সহজ উপায়


৪। শিশুদের মধ্যে আয়রনের ঘাটতি: লক্ষণ এবং চিকিৎসা


৫। গর্ভাবস্থায় রক্তাল্পতা: কারণ, লক্ষণ, চিকিৎসা


৬। শুষ্ক ঠোঁট: কারণ ও প্রতিকার


৭। চুলের যত্নে নারকেল তেল- ব্যবহার ও সুবিধা


৮। ডায়াবেটিস ডায়েট- যে তথ্যগুলো জানা আবশ্যক


৯। বাচ্চাদের ত্বক সুস্থ রাখতে মায়েদের যা জানা উচিত


১০। সুস্থ লিভারের জন্য কোন খাবারগুলো খাওয়া উচিত এবং এড়ানো উচিত


১১। শিশু এবং গর্ভবতী নারীদের আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের ঘাটতি পূরণে করণীয়


১২। গ্যাস্ট্রাইটিস: কী খাওয়া উচিত এবং কী এড়ানো উচিত


১৩। বাচ্চাদের ক্ষুধামন্দা- কারণ ও চিকিৎসা


১৪। ব্রণ: প্রাকৃতিক প্রতিকার

১৫। পেশী ব্যথা (মায়ালজিয়া): কারণ, লক্ষণ এবং প্রতিকার


১৬। নখের সমস্যার প্রাকৃতিক প্রতিকার


১৭। গ্রিন টি পানের  কিছু অজানা সুবিধা


১৮। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে যেসব মিথ্যা ধারণা রয়েছে


১৯।গর্ভবতী নারীদের যে ফলগুলো খাওয়া উচিত নয়


২০। গর্ভাবস্থায় পেটে ব্যথা: কখন স্বাভাবিক এবং কখন উদ্বেগের 


জরায়ু দেখতে কেমন?

 জরায়ু, যা ইংরেজিতে uterus বা womb নামে পরিচিত, নারী দেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি মূলত একটি পিয়ার আকৃতির পেশল অঙ্গ যা প্রজনন ব্যবস্থা...