গর্ভাবস্থায় পেটের ব্যথা আপনার শরীরকে এবং শিশুর বিকাশের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়ার অংশ হতে পারে। ব্যথার অনেকগুলো সাধারণ কারণ রয়েছে। তবে এমন কিছু গুরুতর কারণ রয়েছে যা হলে আপনাকে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। আজকের লেখাটা আপনাকে পেটে ব্যথা কখন স্বাভাবিক, কখন উদ্বেগের তা বুঝতে সাহায্য করবে।
নিচে গর্ভাবস্থায় পেটের ব্যথার সাধারণ কয়েকটি কারণ আলোচনা করা হলো, যা নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই।
বৃত্তাকার লিগামেন্ট ব্যথা
জরায়ুর আকার বাড়ার সাথে সাথে পেলভিক অঞ্চলে সংযোগ তৈরি করার লিগামেন্টগুলো প্রসারিত হয়। এই সময়ে ব্যথা এবং মারাত্মক অস্বস্তি সৃষ্টি হতে পারে। এই জাতীয় ব্যথা সাধারণত গর্ভাবস্থার ছয় মাসের দিকে হয় এবং এটি বিপজ্জনক বলে মনে করা হয় না।
পেট ফাঁপা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য
গর্ভাবস্থা কালীন শরীরে প্রজেস্টেরনের পরিমাণ বাড়ার সাথে সাথে অন্ত্রের ট্র্যাক্টের ক্রিয়াকলাপ হ্রাস পায়। ফলে খাওয়া খাবারগুলো হজম হতে সময় লাগে। এই ধরণের সমস্যা এড়াতে বেশি বেশি পানি পান, উচ্চ ফাইবার যুক্ত খাবার খাওয়া এবং হালকা ব্যায়াম করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
অন্যান্য কারণ
এছাড়াও খাদ্য বিষক্রিয়া, কিডনিতে পাথর, জরায়ু ফাইব্রয়েড বা বিভিন্ন খাবারের সংবেদনশীলতার কারণেও পেটে ব্যথা হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় পেটে ব্যথা যখন বিপজ্জনক
বহির্মুখী (অ্যাক্টোপিক) গর্ভাবস্থা
এটি প্রতি ১০০ গর্ভাবস্থায় একবার ঘটে। এসময় জরায়ু গহ্বরের বাইরে নিষিক্ত ডিম রোপণ হয়। গর্ভাবস্থার ৬-১০ সপ্তাহে তীব্র ব্যথা এবং রক্তক্ষরণ হয়। অ্যাক্টোপিক গর্ভাবস্থা অবশ্যই বন্ধ করা উচিত এবং জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন।
গর্ভপাত
প্রায় ১৫-২০% গর্ভপাত সাধারণত গর্ভাবস্থার প্রথম ১৩ সপ্তাহের মধ্যে ঘটে। গর্ভপাতের লক্ষণগুলো হল পিঠে ব্যথা, লাল বা বাদামী রক্তপাত, যোনি থেকে ক্লট-জাতীয় টিস্যু অপসারণ বা গর্ভাবস্থার সমস্ত লক্ষণ হঠাৎ অদৃশ্য হয়ে যাওয়া।
প্রিক্ল্যাম্পসিয়া
এটি এমন একটি অবস্থা যা গর্ভাবস্থার প্রথম ২০ সপ্তাহ পরে বোঝা যায়। লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে পেটের উপরের অংশে ব্যথা (সাধারণত ডানদিকে, পাঁজরের নীচে), বমি বমি ভাব, বমি এবং পেটে চাপ।
মূত্রনালির সংক্রমণ
এধরণের সংক্রমণ হলেও গর্ভাবস্থায় তা সহজেই চিকিৎসা করা যায়। তবে এই জটিলতা উপেক্ষা করলে ক্ষতির কারণ হতে পারে। এধরণের সংক্রমণে প্রস্রাব করার সময় ব্যথা, অস্বস্তি বা জ্বলাপোড়া হয়।
No comments:
Post a Comment