আপনার শিশু যদি খাবারের প্লেট দেখে সন্তুষ্ট না হয়, বারবার খেতে না চায়, এর অর্থ তার ক্ষুধা কমেছে। ক্ষুধামন্দা গুরুতর কোন সমস্যা নয়, কারণ বেশিরভাগ শিশুরই কোনও না কোনও সময়ে ক্ষুধামন্দা দেখা দিতে পারে। এই সমস্যাটি ২ থেকে ৬ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।
ক্ষুধা হারানোর অনেক কারণ থাকতে পারে, যেমন:
ভাইরাস সংক্রমণ
কিছু নির্দিষ্ট ভাইরাস জনিত রোগ যেমন সর্দি, ব্রঙ্কাইটিস,বা ফ্লু ক্ষুধা হ্রাস করতে পারে। নাকে সর্দি, জ্বর, অবসন্নতা, কাশি এর লক্ষণ।
ধীর বৃদ্ধি
জীবনের প্রথম বছরে, শিশু দ্রুত বৃদ্ধি পায়। পরবর্তীকালে, বৃদ্ধি ধীর হয়ে যায়। এসময়ে ক্ষুধামন্দা দেখা দিতে পারে।
কোষ্ঠকাঠিন্য
যদি শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য হয় তবে তার ক্ষুধা কমে যেতে পারে।
অস্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস এবং পানীয়
অস্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস এবং কোমল পানীয় ক্ষুধার অনুভূতি হ্রাস করে। পাশাপাশি শিশু মোটা হয়ে যেতে পারে।
রক্তস্বল্পতা
রক্তস্বল্পতার কারণেও শিশুর ক্ষুধামন্দা হতে পারে।
প্রযুক্তি
যেসব শিশু টিভির সামনে বা ফোন / ট্যাবলেটে প্রচুর সময় ব্যয় করে তাদের ক্ষুধা হ্রাস পেতে পারে।
মানসিক চাপ
মানসিক চাপ হরমোনের ক্রিয়াকলাপের ওপর প্রভাব ফেলে। এর প্রভাব ক্ষুধার ওপরও পড়তে পারে।
বিষণ্ণতা
বিষণ্ণতা একটি গুরুতর মানসিক অবস্থা। শিশুর বিষণ্ণতা থেকে ক্ষুধামন্দা দেখা দিতে পারে।
অন্ত্রের কৃমি
অন্ত্রের কৃমি হজম প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে। এতে শ্লেষ্মা বা রক্ত, পেটে ব্যথা, ক্লান্তি এবং কখনও কখনও মলদ্বারে চুলকানির সাথে ডায়রিয়া হতে পারে।
সন্তানের ক্ষুধা কীভাবে বাড়ানো যায়?
নিম্নলিখিত কৌশলগুলো আপনার সন্তানের ক্ষুধা বাড়াতে সহায়ক হতে পারে:
-খাবারের আধ ঘণ্টা আগে বাচ্চাকে এক গ্লাস পানি দিন, প্রতিদিন সকালে খালি পেটেও পানি পান করান।
-মিষ্টি তরল (জুস) কম খাওয়ান।
- রঙিন প্লেটে খাবার দেবেন।
- নিয়মিত খাবারের ধরণ পরিবর্তন করুন যাতে শিশু একটি নির্দিষ্ট ধরণের খাবারে বিরক্ত না হয়।
-খাবারের সময়সূচী তৈরি করুন! নিয়মিত খাওয়া শিশুর ক্ষুধা স্বাভাবিক করে তোলে।
-বাচ্চাকে এমন খাবার দিন যা সে হাত দিয়ে ধরে নিতে পারে।
-স্ন্যাকস পুষ্টিকর কিনা তা নিশ্চিত করুন।
কী করা উচিত নয়?
বাচ্চাকে খাওয়ানোর সময় কিছু আচরণ পরিস্থিতি আরও খারাপ করতে পারে। যেমন-
- দিনে দুটো স্ন্যাকসই যথেষ্ট।
- প্লেট থেকে সমস্ত কিছু খেতে বাধ্য করবেন না।
- খাবার সম্পর্কে আলোচনা এড়িয়ে চলুন, এতে শিশু লজ্জা বা অপরাধবোধ করতে পারে।
- বাচ্চাকে খাওয়ার জন্য হুমকি দিবেন না।
- শিশুকে ঘুম থেকে জোর কোরে তুলে খাওয়াবেন না।
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত?
যদি আপনার শিশুর ডায়রিয়া, বমি বমিভাব, পেটে ব্যথা, জ্বর বা বিষণ্ণতার লক্ষণ থাকে তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার।
No comments:
Post a Comment