নবজাতকদের ত্বক স্পর্শকাতর। তাঁদের ত্বকের একটি সাধারণ রোগ হল অ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিস বা একজিমা। এতে শিশুর শরীরের লালচে বাদামি দাগ হয় যা চুলকায় এবং ছোট ছোট লাল ফোলাভাব তৈরি করে। চুলকানির কারণে শিশুর শরীরে ক্ষত বা রক্তপাতের মতো ঘটনা ঘটে, যা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়। সঠিক যত্ন না নিলে অবস্থার অবনতি হতে পারে।
শিশুদের অ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিসের লক্ষণ দেখা দিলে সঠিকভাবে যত্ন নেয়া উচিত। আপনার শিশুর ডার্মাটাইটিস নিয়ন্ত্রণে কিভাবে করবেন তা নিয়েই আজকের আলোচনা।
নিয়মিত গোসল করান
অ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিসযুক্ত শিশুদের প্রতিদিন গোসলের পরামর্শ দেওয়া হয়। ৫ থেকে ১০ মিনিট ধরে গোসল করানো ভালো। এসময় শিশুদের সাবান এবং সুগন্ধযুক্ত কোন লোশন না মাখানো ভালো। গোসল শেষে নরম তোয়ালে দিয়ে হালকাভাবে শিশুর ত্বক মুছে দেয়া উচিত।
নিয়মিত শিশুর ত্বককে ময়শ্চারাইজ করুন
শুষ্ক ত্বক অ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিসের লক্ষণগুলো বাড়িয়ে তোলে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী শিশুর ত্বক ময়শ্চারাইজ করার ক্রিম নির্বাচন করুন। বাজারে অনেকগুলো ক্রিম রয়েছে যা শিশুদের অ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিস সহ ত্বকের জন্য বিশেষভাবে তৈরি।
প্রাকৃতিক পণ্য এড়িয়ে চলুন
বর্তমানে প্রাকৃতিক বা জৈব পণ্য খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে বাচ্চাদের অ্যাটোপিক প্রবণতাসহ ত্বকের জন্য এগুলো ব্যবহার না করা ভালো। এসব পণ্যে থাকা বিভিন্ন গাছের নির্যাস এবং সুগন্ধি শিশুর ত্বকে জ্বালাপোড়া তৈরি করতে পারে।
ত্বকে ক্ষত সৃষ্টি যাতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন
যেসব শিশুর ত্বকে অ্যাটোপিক প্রবণতা রয়েছে, তাঁদের নখ সবসময় ছোট রাখা উচিত। কেননা, যেকোন সময় নক নিয়ে চুলকানোর কারণে ত্বকে ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে, এবং সেই ক্ষত থেকে সংক্রমণ।
উপসর্গ সৃষ্টি করে এমন উপকরণ দূরে রাখুন
বেশ কিছু পণ্য বা উপকরণ শিশুর অ্যাটোপিক প্রবণতাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। যেমন:
ডিটারজেন্ট
সাবান
পারফিউম
হার্ড টেক্সটাইল (যেমন পশম)
শিশুর লালা
খুব বেশি তাপমাত্রা এবং শুষ্ক বাতাস
তাই আপনার শিশুর কাপড় ধোয়ার জন্য ক্লাসিক ডিটারজেন্ট এড়িয়ে চলুন। সুগন্ধ মুক্ত, হাইপোলোর্জিক ডিটারজেন্ট ব্যবহার করলে ভালো।
ঢিলে ঢালা পোশাক পরান
টাইট পোশাক শিশুর মধ্যে অ্যাটোপিক প্রবণতার লক্ষণ আরও বাড়িয়ে তোলে। ফলে চুলকানি হতে পারে। তাই পাতলা ও ঢিলেঢালা পোশাক পরান। রাতে, আপনার শিশুর শরীরে তুলোর কম্বল ব্যবহার করতে পারেন।
এই পদ্ধতিগুলো শিশুর ত্বকের অবস্থার উন্নতি না করতে পারলে অবশ্যই সঠিক চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
No comments:
Post a Comment