নারী বা পুরুষ সবারই ঘাম হয়। এটি শরীরের তাপমাত্রা হ্রাস এবং হাইপারথার্মিয়া প্রতিরোধের জন্য অতি প্রয়োজনীয় একটি প্রক্রিয়া। আমাদের শরীর যখন দেহে স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখার জন্য কাজ করে তখন ঘাম হতে পারে। তবে অতিরিক্ত ঘাম জীবনযাত্রার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।
লক্ষণ ও উপসর্গ
অতিরিক্ত ঘামকে চিকিৎসার ভাষায় হাইপারহাইড্রোসিস বলে। এর লক্ষণ ও উপসর্গের মধ্যে রয়েছে:
ক্রমাগত হাত, পা, কপাল এবং বগল ঘামা;
ঘামের জায়গাগুলোর ত্বক সাদা হয়ে যায়;
পা, বা বলের ত্বকের সংক্রমণ;
রাতে অতিরিক্ত ঘাম।
কারণ এবং ঝুঁকি কারণ
শারীরবৃত্তীয় প্রতিক্রিয়ায় যখন নির্দিষ্ট স্নায়ু ঘামের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে তখন অতিরিক্ত ঘাম হয়। এই স্নায়ুগুলোর অতিরঞ্জিত প্রতিক্রিয়ার কারণে নানা লক্ষণ দেখা দেয়।নিচের কারণগুলোর জন্য অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে।
হাইপারেক্টিভ সহানুভূতিশীল স্নায়ুতন্ত্র;
ডায়াবেটিস;
গাউট;
ফ্রস্টবাইট;
সংক্রমণ;
মার্কুরি বিষ;
মস্তিষ্কের ট্রমা;
হাইপারপিটুইটিরিজম;
মেনোপজ;
গর্ভাবস্থা;
সামাজিক উদ্বেগ;
স্থূলতা;
হাইপারথাইরয়েডিজম এবং গ্রাভস রোগ;
টিউমার;
হাইপোগ্লাইসেমিয়া;
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া;
একই সমস্যা পরিবারের অন্য সদস্যদের থাকলে;
মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট (এমএসজি);
ক্যাফেইন;
চকোলেট;
অতিরিক্ত মশলাদার খাবার খাওয়া;
তরকারী;
অ্যালকোহল।
অতিরিক্ত ঘামের প্রাকৃতিক প্রতিকার
প্রাকৃতিক উপাদানের মাধ্যমে ঘাম প্রতিকার
বগল বা যেসব অঙ্গ বেশি ঘামে তা নিয়মিত পরিষ্কার করে শুকনো রাখতে হবে। ঘাম হলে ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকে সংক্রমণ ঘটে। সংক্রমণ ঠেকাতে অ্যাপল সিডার ভিনেগার এবং চা গাছের তেল দিয়ে তৈরি প্রাকৃতিক মিশ্রণ ব্যবহার করা যেতে পারে।
প্রতিদিনের অতিরিক্ত চাপ পরিহার করেও ঘাম নিয়ন্ত্রণ সম্ভব
আমাদের প্রতিদিনই সংসার, চাকরি, বা সামাজিকতা রক্ষায় অনেক কাজ করতে হয়। কখনো কখনো তা আমাদের মস্তিষ্কে চাপের সৃষ্টি করে। এইসব কাজ আমাদের এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। তবুও শতও ব্যস্ততার মাঝেও প্রতিদিন কমপক্ষে এক ঘণ্টা সময় নিজের জন্য বরাদ্দ করুন।এই সময়ে আপনি যোগব্যায়াম বা ডায়েরি লিখতে পারেন।
অতিরিক্ত ঘাম থেকে মুক্তি পেতে আপনি এই বিষয়গুলো মেনে চলতে পারেন। নিজের শরীরের যত্ন নিজে করাই উত্তম। তবে অনেক ক্ষেত্রেই অতিরিক্ত ঘাম এবং তা থেকে হওয়া শরীরের দুর্গন্ধ মানুষের স্বাভাবিক জীবনে প্রভাব ফেলতে থাকে। তাই অতিরিক্ত ঘাম হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।
No comments:
Post a Comment